বড়োদের নাম বিক্রি করে আর কতো খাবেন?

এদেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, খানকা, সাংস্কৃতিক অঙ্গন সবকিছুতে চলছে আজ নাম বিক্রি করে বাণিজ্য, আধিপত্য বিস্তারের মহা উৎসব! রাজনীতির ময়দানে দেখুন, দেশের প্রধান দুটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আছে সর্বদা নাম বিক্রি করে খাওয়ার ধান্ধায়। তারা নিজনিজ দলের প্রতিষ্ঠাতার নামকে পুঁজি করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেই যাচ্ছে। তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতারা অল্প সময়ে দেশের জন্য অবিস্মরণীয় অবদান রেখে যে জনপ্রিয়তা অর্জন করে গেছেন সেই মহান নেতাদের নামকে বিক্রি করে খাওয়া উত্তরসূরিরা যুগযুগ পর্যন্ত দেশ শাসন করেও জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে নেতাদের ধারেকাছেও যেতে পারছেন না।
.
জাতির অবিস্মরণীয় সেই মহান নেতার উত্তরসূরিদের কেউ আছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা মহান নেতার স্বপ্ন পূরণের দোহাই দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যতিব্যস্ত। আবার কেউ মরিয়া হয়ে পড়েন সেই মহান নেতার আদর্শ বাস্তবায়নের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা ফের করায়ত্ত করার মানসে। অথচ বাস্তবিক দিক দিয়ে তাদের কেউ-ই সেই মহান নেতাদের আদর্শের মধ্যে অটল নেই। তারা অনেক আগেই আদর্শচ্যুত হয়ে গেছে।কিন্তু ক্ষমতায় গেলে উভয় দলই নিজেদের দলনেতার নামকে স্মরণীয় করে রাখতে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, স্থাপনা, এয়ারপোর্ট, হাসপাতাল, কলেজ-ভার্সিটির নামকরণ করে। এবং এই নিয়ে তারা দেশে বাধায় যত ঝামেলা।
.
এভাবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলে নাম বিক্রির মহা উৎসব। বিভিন্ন সময় দেখা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতির মহান ব্যক্তিত্বদের হাতে গড়া কিছু প্রতিষ্ঠানে তাদের উত্তরসূরিরা আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে নানান ঝামেলা বাধিয়ে থাকে। অনেকসময় প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানে ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত যতসব ঘটনা। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা কিম্বা পরিচালকের উত্তরসূরিরা অনেকসময় প্রতিষ্ঠানের পরিচালনার গুরু দায়িত্বও জোরপূর্বক কাঁধে নিয়ে বসেন। আর এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। যা একপর্যায়ে অধঃপতনের কারণ হয়। এভাবে পীরের ছেলে পীর আর পরিচালকের ছেলে হয়ে যায় পরিচালক।
.
সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ হলো, সম্প্রতি বড়োদের নাম বিক্রি করে খাওয়ার সেই লিস্টে নাম লিখিয়েছে দেশের প্রসিদ্ধ, প্রতিষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরাও। তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে নিজেরা উদ্যোগী না হয়ে বড়োদের নাম ভাঙ্গিয়ে নিত্যনতুন সংগঠন করেই যাচ্ছে! তাদের এসব নাম ভাঙ্গানি দেখে মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। সাধারণ মানুষ আসল-নকল তফাৎ করতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে করে ইসলামী সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। মূলত সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার নামে এখন দেশে একধরণের অপসংস্কৃতির সয়লাব চলছে। আসলে এসব কথা বলতেও ভয় লাগে। অনেকে আবার দুশমন ভাবতে শুরু করে। প্রিয় ভাই! আমি কারো দুশমন নই। আপনাদের কল্যাণকামী হয়ে কথাগুলো বলছি।
.
তাই আসুন, বড়োদের নাম বিক্রি নয়। আদর্শ বাস্তবায়ন চাই।

Maolana Ali Azam

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *