নোবেল পিস ও লিটারেচার প্রাইজ নিয়ে বিতর্ক আছে প্রথম থেকেই!

নোবেল প্রাইজ বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার। আর্থিক দিক দিয়েও অন্যতম শ্রেষ্ঠ। নোবেল পিস ও লিটারেচার প্রাইজ নিয়ে বিতর্ক আছে প্রথম থেকেই। আমরা অনেকে ভাবি, বিজ্ঞানের পুরস্কারগুলো মনে হয় সবচেয়ে ফেয়ার এন্ড জাস্টিফাইড। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম কন্ট্রোভার্সি থাকলেও একেবারে যে নেই তা নয়। অনেক সময় যে ফিল্ডে অবদানের জন্য প্রাইজ দেয়া হচ্ছে দেখা গেলো ওই ফিল্ডে ফান্ডামেন্টাল কন্ট্রিবিউশন করেছেন এমন একজনকেই বিবেচনা করা হয়নি। যেমন ধরুন, এবারের ফিজিক্সে নোবেল পেলো তিনজন বিজ্ঞানী অথচ ওই LIGO প্রজেক্টে কাজ করেছেন শতাধিক বিজ্ঞানী। চাইলে পুরো টিমকেও প্রাইজটা দিতে পারতো। ২০০৮ সালে ফিজিওলজিতে নোবেল দেয়া হলো GFP নামের মলিকিউল আবিষ্কারের জন্য অথচ যে বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম এই জিনের ক্লোন তৈরী করেছিলেন তার নামই নাই লিস্টে!! MRI মেশিন আবিষ্কারের জন্য নোবেল দেয়া হলে সেটা নিয়ে রীতিমতো বিতর্কের ঝড় বয়ে যায় ২০০৩ সালে। যেই লোক মূলত এই যন্ত্রটি ডেভেলপ করেন তাকেই বাদ দেয়া হয়। সেটা নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্টে রীতিমত প্রতিবাদ লিপিও ছাপা হয়। এই রকম উদাহরণ আরো অনেক আছে, কয়েকটা মেনশন করলাম মাত্র।

নোবেল সাইন্স প্রাইজের সবচেয়ে বড় ত্রুটি হলো, রেসিজম ও জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন। গায়ের বর্ণ আর ডেমোগ্রাফি একটা বিশাল ফ্যাক্টর। বর্তমান মানুষেরা যেমন মনে করে মুসলিমরা কেনো পায় না? এর অনেক কারণ আছে, অন্যতম হলো রেসিজম। বর্তমানে ইহুদিদের রমরমা অবস্থা থাকলেও একসময় এরাও চরম নির্যাতিত ও অবহেলিত ছিল। যার প্রভাব বিজ্ঞানীদের মাঁঝেও পড়েছিল। ইয়াহুদী ও নারী হওয়ার কারণেই মূলত রোজালিন্ড ফ্র্যাংকলিনকে ডিএনএ আবিষ্কারের জন্য নোবেল দেয়া হয়নি। গত বছরে ডার্ক ম্যাটার এর জন্য নোবেল দেয়া হলো অথচ যিনি (ভেরা রুবিন) ডার্ক ম্যাটার এর এক্সিস্টেন্স প্রুফ করলো তার নামই নাই!! হয়তো নারী হওয়ার কারণে তার নাম নাই, এটা নিয়েও অনেক সমালোচনা হয়েছিল।

কলাবিজ্ঞানীরা পশ্চিমাদের নারী স্বাধীনতা ও সমাধিকারের ব্যাপারে উচ্ছসিত থাকলেও তথ্য বলে অন্য কথা। পশ্চিমা সমাজে নারীরা এখনো পুরুষদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে তার প্রমান অল্পসংখ্যক নারী বিজ্ঞানীদের নোবেল প্রাপ্তি। ১৯০১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছে ৬০০র বেশি বিজ্ঞানী, এর মধ্যে নারী বিজ্ঞানীদের সংখ্যা মাত্র ১৭ জন!!! জ্বি, অবাক হবেন না, এখন পর্যন্ত কোনো কৃষ্ণ বর্ণের বিজ্ঞানী নোবেল প্রাইজ পায়নি!!

তারমানে কি? নারী এবং কালোরা কি রিসার্চ করে না? অবশ্যই করে, তবে এওয়ার্ড দেয়ার সময় অনেক হিসাব নিকাশ করে দিতে হয়, যেই হিসাবের খাতা আমার আপনার চোখের সামনে কখনো খোলা হয়না।

Saifur Rahman

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *