প্রাণ রহস্যের অন্বেষণ
.
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
.
” দা অরিজিন অফ লাইফ ” …
অর্থাৎ,জীবনের উৎপত্তি …
.
সর্বকালেই,সর্বযুগেই যা মানবজাতিকে ভাবিয়েছে।
” আমার সৃষ্টি কীভাবে হলো? ” ,কিংবা ” এই মহাবিশ্বে প্রাণের উৎপত্তি-ই বা কীভাবে হলো? ” ইত্যাদি আরও অনেক শাখা-প্রশাখা নিয়ে বিস্তৃত এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে,হচ্ছে,আর ভবিষ্যতেও হবে।
.
যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছে,এই বিশাল বিশ্বজগতের ক্ষুদ্র এক বিন্দুর সমান গ্রহে,সর্বপ্রথম কীভাবে প্রাণের স্পন্দন দেখা গেল -তার উত্তর দিতে।
কিন্তু যতগুলো উত্তরই,যতধরণের উপায়েই দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে/হচ্ছে না কেন;কোথাও না কোথাও,কোন না কোন ধরণের গোঁজামিল বা অসঙ্গতির ইঙ্গিত উঁকি দিয়ে থাকতে দেখা যায়,তা সে যতই ক্ষুদ্র হোক না কেন।
.
.
যে জিনিসের উৎপত্তি খুঁজতে এত হাঙ্গামা,অর্থাৎ “জীবন” বা ” প্রাণ”;তার তথাকথিত “উৎপত্তি”-র ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করে,
এমন বেশ কয়েকটি মতবাদ বা আরও স্পেসিফিক্যালি বললে,” সাজেশন ” আছে। সেগুলোর নিজেদের মধ্যেও আবার দেখা যায় পারস্পারিক বিরোধিতা বা হাতাহাতি লেগেই থাকে,যে ব্যাপারে কিছু পরে আলোচনার চেষ্টা হবে ইন শা আল্লাহ।
.
তবে সবগুলো ক্ষেত্রেই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে,গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে অর্থাৎ যতরকমে সম্ভব,সবরকমভাবে একটা জিনিসই বলার বা ইন্ডিকেট করার চেষ্টা করা হয় যে- ” LIFE arose from LIFELESS compounds “।
অর্থাৎ ” জীবন “-এর উৎপত্তি হয়েছে ” জীবনহীন ” পদার্থ বা যৌগ থেকে।
.
তো জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে,অর্থাৎ এই ধরিত্রীতে জীবনের বা প্রাণের শুরু কীভাবে হলো তার ব্যাখ্যা প্রদানের চেষ্টায় রত যেসকল “সাজেশনের” কথা বলা হচ্ছিলো,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু “সাজেস্ট” করা ব্যাখ্যা এখানে উল্লেখ করা হলো।
.
.
বলা হয়ে থাকে,যে শুরুর দিকের পৃথিবীর অ্যাটমোস্ফিয়ার “সম্ভবত” / “হয়তোবা” ক্ষুদ্র,সিম্পল কম্পাউন্ড যেমন পানি,নাইট্রোজেন,কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং সামান্য পরিমাণে মিথেন ও অ্যামোনিয়া ধারণ করতো।
১৯২০ সালে,অ্যালেক্স্যান্ডার ওপারিন ও জে.বি.এস হ্যালডেন পৃথকভাবে “সাজেস্ট” করেন যে,সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন কিংবা লাইটনিং ডিসচার্জের (বজ্রবিদ্যুৎক্ষরণ) কারণে প্রাচীন পৃথিবীর অ্যাটমোস্ফিয়ারের অনুগুলো থেকে সিম্পল অর্গানিক (কার্বন-কনটেইনিং) যৌগ গঠিত হয়েছে।
.
স্ট্যানলি মিলার ও হ্যারোল্ড উরে নামের দুই ব্যক্তি অনেকটা সেই একই ধরণের একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন ১৯৫২ সালে এবং পাবলিশ করেন তার পরের বছর অর্থাৎ ১৯৫৩ সালে,যেখানে তারা পানি,মিথেন,অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেনের একটি মিক্সচারকে একটি ইলেকট্রিক ডিসচার্জে প্রায় একসপ্তাহ রাখেন।
ফলাফলে তারা সেখানে কিছু অ্যামিনো এসিডসহ আরও কিছু পানি-দ্রবণীয় অর্গানিক কম্পাউন্ড দেখেন।
.
কিন্তু লুপহোল বা ফাঁক-ফোঁকর থেকেই যায়।
সবচেয়ে বড় লুপহোল হলো,এর সবটাই একটা “সাজেশন” বা “প্রস্তাব”,অথবা “ধারণা”।
.
কারণ প্রথমত,প্রাইমোর্ডিয়াল বা আদি পৃথিবীর যে অ্যাটমোস্ফিয়ারের বিভিন্ন অণুর কথার ব্যাপারে যে ধারণাটি করা হয়েছে,তা একে তো একটি ধারণা;
.
তার ওপরে তখন সেই পরিবেশে কোন অণুর পরিমাণ কতটুকুই বা ছিলো,আর স্ট্যানলি মিলার ও হ্যারোল্ড উরে-এর এক্সপেরিমেন্টে যে ঠিক সেই পরিমাণের বা অনুপাতেরই কম্পাউন্ড নেওয়া হয়েছিল কিনা -তার কোন উল্লেখই নেই।
.
দ্বিতীয়ত,তারা অর্গানিক কম্পাউন্ড গঠন হবার কেবল একটা পদ্ধতিরই কথা মাথায় রেখে এক্সপেরিমেন্টটি করেছিলেন,তাই বলে যে শুধুমাত্র সেই পদ্ধতিতেই তা হয়েছিলো-তা ১০০ ভাগ নিশ্চয়তার সাথে কখনোই বলা যাবে না;কারণ তা “সায়েন্স”-এর কোমড়ের জোর,অর্থাৎ “পর্যবেক্ষণ” করা কখনোই সম্ভব নয়।
.
আর বাস্তবে খেয়াল করলে দেখা যাবে,প্রকৃত সায়ন্টিস্টরা তা বলেনও না;কেবলমাত্র বঙ্গদেশীয় আর্টস,কমার্স,কলা-সাহিত্যের বিজ্ঞানীরা ছাড়া।
.
যেমন একটা উদাহরণে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করা যাক।
ধারণা করা হয়,উদ্ভিদদের আগে সায়ানোব্যাকটেরিয়ারাই ২.৩ বিলিয়ন বছর আগের আশেপাশে “গ্রেট অক্সিজিনেশন ইভেন্ট” ঘটানোর জন্য,বা একেবারে প্রাক্টিক্যালি ০% থেকে পরিবেশে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য দায়ী।
.
অর্থাৎ অধিকাংশ সায়েন্টিস্টরাই ভাবেন যে আদি বা প্রাচীন পৃথিবীর অ্যাটমোস্ফিয়ার রিডিউসিং বা অক্সিজেনবিহীন ছিল;সায়ানোব্যাকটেরিয়ারাই প্রথমে অক্সিজেন বাড়িয়ে প্রায় ১০%-এর কাছাকাছি এনেছিলো,সেখান থেকে পরবর্তীতে উদ্ভিদদের উৎপত্তি হয়ে তারা সালোকসংশ্লেষণ করে বর্তমান পরিবেশে অর্থাৎ প্রায় ২১%-এ নিয়ে আসে।
.
কিন্তু ২০১১ সালের এক আর্টিকেলে প্রকাশ পায় যে,হেডিয়ান ইওন (যা শুরু হয়েছিলো প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবী শুরুর সাথে,এবং শেষ হয়েছিলো ৪ বিলিয়ন বছর আগে)-এর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অক্সিজেন লেভেল বর্তমান সময়ের মত একই ছিল।
তাহলে উপায়?
.
“কেমনে কী?”
“how what?”
.
তো এখন যদি ভিন্ন কেউ উঠে দাঁড়িয়ে বলে যে-
” না,আমি ল্যাবোরেটরিতে পানির মধ্যে ইলেক্ট্রোলাইসিস বা বিদ্যুৎ চালনা করে দেখেছি/পেয়েছি যে,হাইড্রোজেন থেকে অক্সিজেনকে মুক্ত করে পাওয়া যায়;
আদি পৃথিবীর অ্যাটমোস্ফিয়ার তো প্রচুর রাফ ছিল,বজ্রবিদ্যুৎ তো সেক্ষেত্রে কোন ব্যাপারই না,কাজেই তখনকার সময়ে পানিতে বিদ্যুৎক্ষরণের মাধ্যমেই অক্সিজেন মুক্ত হয়ে জমা হয়েছে… ”
-তা হলে সেটাকে কলাভবনের বিজ্ঞানীরা “সায়েন্টিফিক্যালি” নাল অ্যান্ড ভয়েড বলবেন কোন যুক্তিতে?
.
সেটা যে ঠিক এইভাবেই হয়েছে,তার পর্যবেক্ষণের অভাবের যুক্তিতে?
স্ববিরোধীতায় ভর দিয়ে আর কদ্দুর যাবেন দেশের বিজ্ঞানের ঠিকাদারেরা?
.
এসবের জ্ঞান থাকার কারণেই হয়তো কিছু বিজ্ঞানীরা বেরসিকের মতো মিলার-উরের “অ্যাসাম্পশন” বা “ধারণা”-টি,মূলত গ্যাস মিশ্রণের প্রারম্ভিক উপাদান হিসেবে ব্যবহার হওয়ার ব্যাপারটিকে চ্যালেঞ্জ করে বসলেন।
যা একটি সঠিক “কাজের মত কাজ” ছিল,যার কারণ হিসেবে বলা যায় অতি সাম্প্রতিককালে পাওয়া কিছু ব্যাপার যেগুলো “সাজেস্ট” করে যে পৃথিবীর আদিম বা মৌলিক,কিংবা প্রাথমিক অ্যাটমোস্ফিয়ার হয়তোবা মিলার-উরের পরীক্ষায় ব্যবহৃত গ্যাসসমূহ থেকে ভিন্ন রকমের মিশ্রণের ছিল।
.
বা আরেকটা ব্যাপার কম কথায় বলতে গেলে,
.
একই ধরণের সকল পরবর্তী পরীক্ষায় বা ল্যাবে প্রাপ্ত মিশ্রণ দেখা যায় যে রেসিমিক ধরণের,অর্থাৎ একই যৌগের ডানহাতি ও বামহাতি রূপ একই সাথে তৈরী হয় এবং অবস্থান করে;অথচ প্রকৃতিতে বা বায়োলজিক্যাল সিস্টেমে প্রাপ্ত প্রায় সকল যৌগই একটি নির্দিষ্ট ধরনের,হয় ডানহাতি (যেমন কার্বোহাইড্রেট) অথবা বামহাতি (যেমন অ্যামিনো এসিড তথা প্রোটিন)।
.
কিংবা বলা যায় ২০০৮ সালে মিলার ও উরের প্রাক্তন ছাত্র জেফরি বাদার মিলার-উরের মত একই ধরনের পরীক্ষায় খেয়াল করা,যে বর্তমানে প্রচলিত আদি পৃথিবীর যেসকল মডেল পাওয়া যায়,সে পরিবেশে কার্বন ডাই-অক্সাইড আর নাইট্রোজেন মিলে নাইট্রাইটসমূহ তৈরী করে,যা অ্যামিনো এসিডসমূহ যত দ্রুত গঠিত হয় ঠিক ততটাই দ্রুততার সাথে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে।
.
পরবর্তীতে যখন বাদা মিলার-উরে টাইপের পরীক্ষা আয়রন ও কার্বোনেট মিনারেলস বা খনিজ দিয়ে পুনরায় করেন,তখন সেখানে অ্যামিনো এসিডে সমৃদ্ধ হতে দেখেন।
.
এই খনিজের ব্যাপারটা খেয়ালে রাখার অনুরোধ রইলো।
.
.
তো সেই চ্যালেঞ্জ যেসকল বিজ্ঞানীরা করেছিলেন,তারা আবার “সাজেস্ট” করলেন যে,প্রথম বায়োলজিক্যাল মলিকিউলস বা অণুসমূহ কিঞ্চিৎ ভিন্নভাবে গঠিত হয়েছে;অন্ধকারে এবং পানির নিচে।
সমুদ্র তলদেশের হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট (কোন গ্রহের সারফেসে বিদ্যমান একধরণের ফাটল,যার মাধ্যমে জিওথার্মালি উত্তপ্ত পানি বের হয়ে আসে;এগুলো সাধারণত সক্রিয় আগ্নেয়গিরির স্থানে,যেসব স্থানে টেকটোনিক প্লেটগুলো সরে যাচ্ছে,সমুদ্র বেসিনসমূহ এবং হটস্পটের কাছে পাওয়া যায়) ,যা প্রায় ৪০০°সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ধাতব সালফাইডের সলিউশন বা দ্রবণ নিঃসৃত করে -“হয়তোবা” সমুদ্রের জলে বিদ্যমান সিম্পল কম্পাউন্ড থেকে অ্যামিনো এসিড এবং অন্যন্য ক্ষুদ্র অর্গানিক অণু গঠনের উপযুক্ত অবস্থা প্রোভাইড করেছে।
.
আবারও সেই “ফির পেহলে সে”।
ঘুরেফিরে সেই “প্রোবাবলি” / “মেবী” / “হয়তোবা” ইত্যাদির বাঁধছাড়া প্রবাহ।
.
আচ্ছা,এখন একটা কথা বলা যায়।
যে এইযে যে উল্লেখিত “হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট”,এটি তো এখনো অবধি পৃথিবীতে বিদ্যমান আছে।
তাহলে এখনো কেন সেই ফ্রম দা স্ক্র্যাচ বা একেবারে প্রথম থেকে “জীবনের উৎপত্তি” হতে দেখা যায় না?
.
পৃথিবীর কথা নাহয় বাদই দেওয়া হলো।
কিন্তু এও তো “বিলিভ” করা হয় যে Saturn বা শনির চাঁদ Enceladus এবং Jupiter বা বৃহস্পতির চাঁদ Europa -তেও হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট রয়েছে,এমনকি Mars বা মঙ্গলেও একসময় এনশেন্ট বা প্রাচীন হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট ছিল বলে ” স্পেকিউলেট ” বা ” কল্পনা ” করা হয়।
এখন যদি শনির চাঁদকে তার বয়স নিয়ে চলমান কথা কাটাকাটির কারণে,আর তার সাথে “বাই ওয়ান,গেট ওয়ান ফ্রী” প্যাকেজে মঙ্গলের কথাও বাদ দেওয়া হয়,
.
তবুও তো বৃহস্পতির চাঁদখানা বেচারা অম্লানবদনে উঁকি দিয়ে থাকে,যে সিনিয়র সিটিজেনের বয়স প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর।
.
পৃথিবীর বুকে জীবনের সবচাইতে পুরোনো যে ফসিল প্রমাণ পাওয়া যায়,তা হলো প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন বছর আগের;যেখানে পৃথিবীর বয়স ধারণা করা হয় প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর।
.
আবার সায়েন্টিস্টরা রিসেন্টলি এও “ধারণা” করতেছেন যে ৪.১ বিলিয়ন বছর আগেই “হয়তো” প্রাণ অস্তিত্বশীল হতে পারতো,যখন পৃথিবীর বয়স খুবই কম ছিল।
.
অর্থাৎ সোজা কথায়,পৃথিবীতে জীবনের সূচনা “সম্ভবত” ৩.৮ ও ৪.১ বিলিয়ন বছরের মাঝামাঝি সময়ে হয়েছে।
.
তাহলে ধারণা,প্রমাণ যা-ই ধরে আগানো হোক না কেন,জীবন যদি সেই হাইড্রোথার্মাল ভেন্টের সাহায্যেই বিকশিত হত;
.
তাহলে কি মনে হয় না,যে প্রায় পৃথিবীরই সমবয়সী এবং হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট-সম্পন্ন হওয়া বৃহস্পতির চাঁদ Europa -তেও এতদিনে জীবনের উৎপত্তি বা বিকাশ যেটাই বলা হোক না কেন,সেই একই সময়ের ব্যবধানে ইতিমধ্যেই তা হয়ে যেত?
.
আর হয়ে উন্নত ও বুদ্ধিমান কোন জীব/প্রাণী এতদিনে সেখান থেকে “গজিয়ে” এসে আমাদের পরিচিত বিশ্বজগতে ভাগ বসাতে ভিড় জমাতো?
.
যাই হোক,কলাসাহিত্যের ব্যাকগ্রাউন্ডের “বিজ্ঞানী”-দের উত্তর আশা না করে এগিয়ে যাওয়া যাক।
.
এরপর যেমন আবার আছে ঘনীভবনের ব্যাপার-স্যাপার।
অর্থাৎ সিম্পল মনোমার অণু থেকে কমপ্লেক্স বা জটিল পলিমার অণুর উৎপত্তি হবার কাহিনী।
.
তো সেক্ষেত্রে কনডেনসেশন বা ঘনীভবন প্রক্রিয়া থাকবে,যার মাধ্যমে উপরের কার্যকলাপ সংঘটিত হবে;অর্থাৎ সিম্পল অণু যুক্ত হয়ে কমপ্লেক্স অণু তৈরী হবে।
.
আবার হাইড্রোলাইসিস বা পানিযোজন প্রক্রিয়াও থাকবে,যার মাধ্যমে সম্পূর্ণ তার বিপরীত হবে;অর্থাৎ জটিল অণু ভেঙে গিয়ে সাধারণ অণুতে ফিরে যাবে।
তো উপায়?
.
ঘনীভবনের চেয়ে যদি পানিযোজন বেশি হয়,অর্থাৎ গড়ার চেয়ে যদি ভাঙনের হার বেশি হয় -তাহলেই তো কেল্লা ফতে!
.
কারণ তাহলে কোষের উপাদান গঠন হয়ে ওঠার আগেই তা ভেঙে যাবে,ফলাফল জীবের অস্তিত্ব : error 404,not found ।
.
কাজেই যখন নিজেদের অস্তিত্ব নিয়েই টানাটানি পড়ে গেল,তখন বলা হলো যে তাহলে পানিযোজনের চেয়ে ঘনীভবনের,অর্থাৎ ভাঙার চেয়ে গড়ার হার বেশি হতে হবে।
.
কিন্তু শুধু মুখের কথায় তো আর পানি গরম হয় না;প্রশ্ন আসে পানিযোজনের চেয়ে যে ঘনীভবন বেশি হবে,তা কীভাবে হবে?
কোন যুক্তিতে হবে,আর কেনই বা পানিযোজন কম হয়ে ঘনীভবন বেশি হবে;যেখানে “জীবনের উৎপত্তি”-র একটা উল্লেখযোগ্য “সাজেশন”-ই বলে যে জীবন শুরু হয়েছিলো আন্ডার ওয়াটার,বা পানির নিচে?
.
এর জবাবে এখন বলা হলো,
তাহলে “হয়তোবা” ক্লে মিনারেলস,বা কাদার খনিজসমূহ সেসমস্ত বিক্রিয়ার প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে,এবং বিক্রিয়ার উৎপাদসমূহকে পানি থেকে পৃথক রেখেছে।
লে হালুয়া!
ঘুরেফিরে আবারও সেই মিনারেলস,বা খনিজ।
.
কিন্তু যখন- ক্বুরআনে বলা হয়েছে যে মানুষ তথা আদম (আলাইহিস সালাম)-কে কর্দম,বা কাদামাটির ” Extract “/ ” Essence ” বা নির্যাস থেকে তৈরী করা হয়েছে[১] -এমনটা দেখানো হয়,তখন তো তা বঙ্গদেশীয় শিয়াল,প্যাঁচা,ভাল্লুক ইত্যাদির মুখোশ নিয়ে মঙ্গল কামনা করতে বের হওয়া প্রবল “বিজ্ঞানমনস্ক” সম্প্রদায়ের বাঁ পায়ের তল দিয়েও যায় না।
ব্যাপারটা তো অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর-
.
” আর্টস,কমার্স,সাহিত্য,ললিতকলা প্রভৃতির তুখোড় ‘বিজ্ঞানী’-দের তীব্র নাক সিঁটকানো উপেক্ষা করে,
একি বললেন সায়েন্টিস্টরা?! (ভিডিও ছাড়া) ”
-জাতীয় খবরের হেডলাইন হয়ে যাবার মতো যোগ্যতা রাখে।
.
অবশ্য এক্ষেত্রে একটা কথা পরিষ্কার করা ভাল,যে এদেশের বিজ্ঞানের ঠিকাদারদের কাছে কেবল সেই সমস্ত “বৈজ্ঞানিক” ব্যাপার-স্যাপারই গুরুত্ব বহন করে,যা স্থূল দৃষ্টিতে হলেও ইসলামের বিপরীতে যায়;তা সে কেবল এক “হাইপোথিসিস’ বা “সাজেশন”,কিংবা “ধারণা”-ই হোক না কেন।
অন্যদিকে সায়েন্সের যেসমস্ত ব্যাপার সামান্য হলেও ইসলামের পক্ষে যাবার সম্ভাবনা আছে,কিংবা অ্যাটলিস্ট বিপক্ষে যাবার ব্যাপারে দূর-দূরান্ত দিয়েও কোন আভাস-ইঙ্গিত নেই;এখন হোক তা সে প্রতিষ্ঠিত ফ্যাক্ট কিংবা আন্ডারগোয়িং রিসার্চ, তা তাদের কাছে সেই সামান্য “ধারণা”-টুকুরও মর্তবা পায় না,যা ইসলামের বিরুদ্ধে যাওয়া সামান্য এক “হাইপোথিসিস” বা “অনুমান”-ও তাদের কাছে পেয়ে থাকে।
.
আর এখানেই মুসলিমদের সাথে তাদের মোটাদাগের পার্থক্য।
কারণ মুসলিমরা কখনোই বিজ্ঞানকে “পরম সত্য”-এর মাপকাঠি বানিয়ে ইসলামের যৌক্তিকতা খুঁজতে যায় না,বরং তারা ইসলামের স্ট্যান্ডার্ডে বিজ্ঞানসহ জ্ঞানের যাবতীয় স্তরকে মেপে থাকে;এখন তা সে হোক ইসলামের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে,তাতে দিনে দিনে তারা সেসমস্ত “মুক্তচিন্তক”-দের অনুসরণে সাপের মত খোলস পাল্টায় না।
.
আবার কখনো কখনো তথাকথিত বিজ্ঞানীদেরকে বলে দেখা যায় যে,ক্বুরআনেই যদি এসব দেওয়া বা বলা থাকে,তাহলে মুসলমানরা আগেই কেন তা আবিষ্কার করে না;কেন শুধু কিছু আবিষ্কার হবার পরেই বলে যে এটা আমাদের গ্রন্থে বা ধর্মে আগেই ছিল -যার মাধ্যমে তাদের “মুক্তচিন্তা”-র সীমাবদ্ধতাটা তারা নিজেরাই দেখিয়ে দেয়।
.
কারণ ক্বুরআন বা দ্বীন ইসলামের উদ্দেশ্য কখনোই সায়েন্টিফিক আবিষ্কার করা না,বরং মুসলিমদের কাজ হলো কেবল শোনা এবং মানা[২]।
দ্বীন ইসলাম কখনোই স্বীয় অস্তিত্বের জন্য বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল না,বরং বিজ্ঞানই সেধে গিয়ে দিনে দিনে দ্বীন ইসলামের নির্ভরযোগ্যতা আরও বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।
.
তবে ক্বুরআন,যেহেতু এটি একটি ঐশী বাণী,ফলে এর মধ্যে মহাবিশ্বের বেশ কিছু রহস্য ন্যাচারালি বা খুব স্বাভাবিকভাবেই উন্মোচিত হয়েছে-যা কেবলই আমাদের মুসলিমদের ঈমান বৃদ্ধির জন্য ক্যাটালিস্ট বা প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
.
কিন্তু এখন সমস্যাটা দেখা যায় তখনই,যখন তথাকথিত নাস্তিক,সেকুলার বা মোটের উপরে স্বঘোষিত বিজ্ঞানীরা,তাদের “উত্তরাধিকার সূত্রে” প্রাপ্ত সম্পত্তি বলে মনে করা “সায়েন্স” বা বিজ্ঞানকে তাদেরই ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ,তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা দ্বীনের সমান্তরালে চলে আসতে দেখে।
.
লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে তখন বিজ্ঞান বিজ্ঞান করা সেসকল প্রাণীদেরকে যখন বাধ্য হয়ে স্বীকার করতে হয়,যে দ্বীনের সে বিষয়টা যেটিকে “অবৈজ্ঞানিক” বা “ভিত্তিহীন” বলা হয়ে গেছে,তাকেই আবার নিজেদেরই ভর দেওয়া খুঁটি দিয়ে অবলম্বনের স্বীকৃতি দিতে হচ্ছে -তখনই মূলত এ ধরণের যুক্তিহীন আক্রমণ করে ব্যর্থ ক্রোধ সংবরণের চেষ্টা করা হয়।
.
অথচ দেখা যায় যে, মার্কোনি সাহেবের আগেই যে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বেতার তরঙ্গের গবেষণা ও আবিষ্কার করেছিলেন,অথচ তাকে নোবেল বা কোন ধরণের স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি -এই অন্তর-নিংড়ানো আক্ষেপ নিয়ে তাদেরই “বিজ্ঞানচর্চা”-র অন্যতম পরম আস্থার স্থান,মুক্তমনা ব্লগে বিশাল এক আর্টিকেল প্রকাশিত হয়ে বসে আছে;আবার এরাই মুসলিমরা কেন তাদের চোখে আঙুল দিয়ে সায়েন্স ও ইসলামের পূর্বঘোষিত সামঞ্জস্যতা দেখিয়ে দেয়,তা নিয়ে ক্ষোভে গাল ফুলিয়ে বসে থাকে।
.
ঠিক কতটুকু মানসিক সংকীর্ণতা এবং একচোখা মনোভাব থাকলে এমন এমন সব আশ্চর্যজনক feat বা হতবুদ্ধি করে দেওয়া কার্যকলাপ করা সম্ভব হয়ে ওঠে,তা এই অধমের ধারণারও বাহিরে।
.
.
যাই হোক।
তো যে ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিলো;দা অরিজিন অফ লাইফ,বা জীবনের উৎপত্তি।
.
ইতিপূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে জীবন বা প্রাণের উৎপত্তি/বিকাশের ক্ষেত্রে একটা পুরোনো কাসুন্দিকেই বারবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ইন্ডিকেটের চেষ্টা করতে দেখা যায় যে, ” LIFE arose from LIFELESS compounds “।
অর্থাৎ ” জীবন “-এর উৎপত্তি হয়েছে ” জীবনহীন ” পদার্থ বা যৌগ থেকে।
তো নব্য মডারেট,সেকুলার কিংবা নাস্তিক প্রমুখ “বিজ্ঞানমনস্ক”-দেরকে দেখা যায়,”হা রে রে রে” আওয়াজ তুলে এসে বলে যে- “দেখছো,বলছিলাম জীবনের শুরু বা সৃষ্টিতে কোন গডের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই?যত্তসব গন্ডমূর্খ,মধ্যযুগীয় চিন্তা-চেতনাধারীর দল…”
.
কিন্তু সেসমস্ত কলাসাহিত্যিক বিজ্ঞানীরা জানেই না,যে তাদের এই “গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল” টাইপ যুক্তির(!?!) দাবী বা প্রমাণ,কোন সায়েন্টিস্টরা শক্তভাবে করেন নি বা আরও স্পেসিফিক্যালি বললে,আজ পর্যন্ত করতে পারেন নি।
.
কারণ জীবন বা লাইফ,অথবা প্রাণ -যাই বলা হোক না কেন,তার কোন গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞাই আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি;আর যেগুলোও বা পাওয়া যায়,তারও সবই কন্ট্রোভার্সিয়াল বা বিতর্কমূলক।
.
তবে সেসবের মাধ্যমেই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে যে জিনিসগুলোই বলার চেষ্টা করা হয়,সেগুলো হলো যে- অর্গানিজমসমূহ কোষ দিয়ে গঠিত,তাদের মেটাবোলিজম বা বিপাকক্রিয়া হয়,বৃদ্ধি হয়,বংশবিস্তার করে ইত্যাদি ইত্যাদি -এসবই হলো প্রাণ,বা জীবন।
.
অতঃপর অরিজিন অফ লাইফের “গোজাঁমিলীয়” ব্যাখ্যার চেষ্টায় এসমস্ত সংজ্ঞার দ্বারা তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্করা এ-ই বুঝানোর চেষ্টা করে যে,”প্রাচীন পরিবেশে জীবনহীন মৌল বা যৌগ থেকে অর্গানিক কম্পাউন্ড যেমন অ্যামিনো এসিড ‘ইত্যাদি’ তৈরী হয়েছে,এবং সেভাবেই জীবনের উৎপত্তি হয়েছে।
.
এখানে ওইসব ‘কনসেপ্ট অফ গড’-গুহাবাসী চিন্তা-ভাবনা…”।
.
কিন্তু এই জীবন বলতে যে তারা কী বোঝে,বা আদৌ কিছু কি বোঝে কিনা,আল্লাহু ‘আলাম।
.
কারণ তারা এই জিনিসটা অনুধাবন করতে অক্ষম হয় যে এই সমস্ত অর্গানিক কম্পাউন্ড অর্থাৎ অ্যামিনো এসিড তথা প্রোটিন,কার্বোহাইড্রেট,লিপিড প্রভৃতি কাজ করে “লাইফ” বা “জীবন”/”প্রাণ”-এর ” ভেসেল ” বা ” ধারক ” হিসেবে,এমন এক এখনো অবধি আনআইডেন্টিফাইড জিনিসের ” বাহক ” হিসেবে সার্ভ করে;
যার জ্ঞান কেবলমাত্র মহান সৃষ্টিকর্তারই এখতিয়ারে[৩],যার ব্যাখ্যা বা বর্ণনা তো দূরের কথা,আজ পর্যন্ত যা এমনকি ঠিকমতো সংজ্ঞায়িত করাও সম্ভব হয় নি।
.
অন্যথায় যদি এসমস্ত কম্পাউন্ডই জীবনের উৎস হতো,কেবলমাত্র যদি প্রতিটা অণু থেকে অঙ্গাণু- তথাকথিত অসীম পরিমাণ “অ্যাক্সিডেন্ট”/”এমনি এমনি ঘটে যাওয়া”-র মধ্যেও সূক্ষাতিসূক্ষভাবে খাপে খাপ খেয়ে একেকটি কোষ,টিস্যু,অর্গানিজম বা প্রাণী কিংবা মানুষ গঠন হলেই তাকে প্রাণ আছে বলা যেত;তাহলে তো কোন মানুষকে কোনদিনই মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হতো না।
.
কারণ একজন মানুষ জীবিত অবস্থায় তার দেহে ঠিক যে পরিমাণ অণু,পরমাণু থাকে,যেসমস্ত বায়োমলিকিউলসমুহ থাকে;সে ব্যক্তি মারা গেলেও তো সেই একই বস্তুসমূহ তার দেহে বিদ্যমান থাকে।
.
তাহলে কোন সে অজানা বিষয়ের ফলে একজন মৃত মানুষের দেহে পুনরায় DNA-এর রেপ্লিকেশন হয় না,কোষ বিভাজন হতে দেখা যায় না,মেটাবোলিজম চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়,একই নিউরন সেল থাকা সত্ত্বেও ব্রেইন ডেড ঘোষণা করা হয়?
.
অথবা কোন সে অজ্ঞাত কারণে একজন জীবিত ব্যক্তির দেহ মৃত্যুর পরের মত ডিগ্রেড বা ক্ষয়ে যায় না, টিস্যু বা অর্গানগুলো পঁচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়ায় না?
.
কী সেই কারণ?
.
কোষের কার্যকলাপকেই প্রাণ হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টায় রত বঙ্গদেশের আর্টস,কমার্সের স্বঘোষিত কিংবা মুক্তমনা,সামুর মত ব্লগে “বিজ্ঞানচর্চা” করা এবং “কলাভবন ল্যাবোরেটরি”-তে অধ্যয়নরত “বিজ্ঞানী”-রা,আর কতই বা কথা প্যাঁচানোর চেষ্টা করবে?
যেই বিভিন্ন বায়োমলিকিউলে গঠিত কোষে বিভিন্ন মেটাবলিক বা বিপাকীয় কার্যকলাপ চলে,সেই একই বায়োমকিউলসমৃদ্ধ কোষে কেন মৃত্যুর পর সমস্ত কার্যকলাপ স্তব্ধ হয়ে যায়?
.
মানে জিনিসটা অনেকটা এরকম যে আপনি একটি সাইকেল চালাচ্ছেন,তো এক ব্যক্তি আপনাকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো এতক্ষণ সাইকেলটির চাকা ঘুরছিলো কেন,বা সাইকেলটি চলছিলো কেন।
আপনি,কিংবা যেকোন সুস্থ মস্তিষ্কের ব্যক্তিই জবাব দিবেন,যে সাইকেলটির প্যাডেল মারছিলেন বলেই চাকা ঘুরছিলো বা সাইকেলটি চলছিলো;
কিন্তু সে ব্যক্তি বললেন যে “না,এটা হতে পারে না।বরং সাইকেলটির চাকা ঘুরছিলো বা সাইকেলটি চলছিলো বলেই আপনি প্যাডেল মারছিলেন।”
খুব কি যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হচ্ছে?
.
আসল ব্যাপারটা ঠিক এই জায়গাতেই।
কোষ কিংবা অর্গানিজম,অথবা মানুষ -যাই বলা হোক না কেন,
সে ব্যক্তি “জীবিত” আছে,বা তার মধ্যে “প্রাণ”-এর অস্তিত্ব আছে বলেই যে তার মধ্যে এসকল ক্রিয়াকলাপ চলছে বা চলে;
এর বিপরীত অর্থাৎ এসমস্ত ক্রিয়াকলাপ চলছে বা চলে বলে যে সে “জীবিত” নয়,বা সে কারণে যে তার মধ্যে “প্রাণ”-এর সঞ্চার হয় নি -সেসমস্ত স্বঘোষিত “বিজ্ঞানচর্চাকারী”-রা এই মৌলিক ব্যাপারটা বুঝতেই অক্ষম হয়ে পড়ে থাকে।
.
এরা কিছু হলেই বা কোথাও কোন মিল পেলেই কমন অ্যানসেস্টর বা সাধারণ পূর্বপুরুষ খুঁজে,তা ইন্টারমিডিয়েট ট্রানসিশনাল ইন্ডিভিজুয়াল বা মধ্যবর্তী পরিবর্তনশীল ধাপ,অথবা সহজ ভাষায় মিসিং লিঙ্ক থাকা না থাকার তোয়াক্কাও না করে মূহুর্তের মধ্যে এক পূর্বপুরুষ থেকে উৎপত্তির কথা ঢালাওভাবে প্রচার করতে পারে; কিন্তু একই ডিজাইনের হওয়া দেখে,অর্থাৎ ১১৪টি (রিসেন্টলি পাওয়া সমেত ১১৮টি) মৌলের মধ্য থেকে সমস্ত জীবিত প্রাণীরই কেবল কার্বন-বেইজড লাইফফর্ম হওয়ার পেছনে যে একজন MASTER DESIGNER -এর হাত আছে-তা তারা সামান্য পরিমাণে “স্পেকিউলেট”-ও করতে পারে না,এই হলো তাদের মুক্তচিন্তার দশা।
.
কাজেই চিন্তা করুন,
বিজ্ঞানকে “পরম সত্য”-এর মাপকাঠি ধরার ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন।
মানসিক দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে উঠুন।
===============================
তথ্যসূত্রঃ
[১] ■তিনিই তোমাদেরকে কর্দম/কাদামাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, …
-সূরাহ আল-আন’আম,২ এর প্রথমাংশ
.
■… কিন্তু সে (ইবলিস/শাইত্বন) বললো:”আমি কি এমন ব্যক্তিকে সাজদাহ করবো,যাকে আপনি কর্দম/কাদামাটির দ্বারা সৃষ্টি করেছেন?”
-সূরাহ আল-ইসরা সূরাহ বানী ইসরাঈল,৬১ এর শেষাংশ
.
■আমি মানুষকে [আদম (আলাইহিস সালাম)] কর্দম/কাদামাটির সারাংশ/নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি।
-সুরাহ আল-মু’মিনূন,১২
.
■তিনিই দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী,পরাক্রমশালী,পরম দয়ালু,
■যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন,এবং মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন কর্দম/কাদামাটি থেকে।
-সূরাহ আস-সাজদাহ,৬-৭
.
■(স্মরণ করুন) যখন আপনার পালনকর্তা মালাইকাকে বললেন:”নিশ্চয়ই,আমি কর্দম/কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করবো”।
-সূরাহ সাদ,৭১
এবং এছাড়াও আরও অনেক স্থানে…
.
[২]
■এবং তোমরা স্মরণ করো আল্লাহর নিয়ামাতের কথা,যা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ঐ অঙ্গীকারকেও যা তিনি তোমাদের কাছে থেকে নিয়েছেন,যখন তোমরা বলেছিলে:”আমরা শুনলাম এবং মেনে নিলাম”।এবং আল্লাহকে ভয় করো।নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের অন্তরের গোপন বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ খবর রাখেন।
-সূরাহ আল-মায়িদাহ,৭
.
[৩] ■এবং তারা আপনাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে।বলে দিন,”রূহ আমার পালনকর্তার আদেশে ঘটিত।এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।”
-সূরাহ আল-ইসরা বা সূরাহ বানী ইসরাঈল,৮৫
.
■… তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে কোন কিছুই তারা বেষ্টিত/অনুধাবন/অর্জন করতে পারবে না,যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। …
-সূরাহ আল-বাক্বারাহ,২৫৫ (আয়াতুল কুরসী) এর শেষের কিছু পূর্বের অংশবিশেষ
==============================
লেখকঃ মোহাম্মাদ মশিউর রহমান
Leave Your Comments