জুমআর খুতবা আরবী না অনারবী ?

জুমআর খুতবা আরবী না অনারবী ?

الحمد لله وكفي وسلام علي عباده الذين اصطفي. اما بعد !
আল্লাহ তা‘আলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের মত জুমআর নামাযও ফরয করেছেন। জুমআর নামাযের জন্য অতিরিক্ত কিছু শর্ত দিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের উপর ফযীলত দিয়েছেন। তন্মধ্যে একটি শর্ত হলো, নামাযের পূর্বে খুতবা দেয়া। খুতবা দেওয়ার নিয়ম ও তার ভাষা আরবীতে হওয়াই শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত। রাসূল স. এর যুগ থেকে অদ্যাবদি এ নিয়ম মেনেই আহলে হক উলামাগণ আমল করে আসছেন।
কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, ইসলামের এই ক্রান্তিলগ্নে কতিপয় চিহ্নিত মহল মীমাংসিত এই বিষয়টি নিয়ে মত পার্থক্য করে বলে বেড়াচ্ছে যে, অনরাবী ভাষায় খুতবা দেয়া যাবে। শুধু তাই নয়; বরং তারা ইমামগণের উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলছে, ইমাম মালেক র. ব্যতিত বাকী ইমামদের মতে অনারবী ভাষায় খুতবা দেয়া জায়েয। তাই মুসলিম জাতির সামনে খুতবার ভাষার শরয়ী হুকুম তুলে ধরার লক্ষ্যে আমার ক্ষুদ্র এ প্রয়াস।

খুতবা বলতে কী বুঝায় ?
খুতবা একটি পারিভাষিক শব্দ। শরীয়তের পরিভাষায় এর স্বতন্ত্র পরিচয় রয়েছে। শুধু আভিধানিক অর্থের মাধ্যমে এর পরিচয় লাভ করা সম্ভব নয়। এটা শুধু খুতবাতে নয়; বরং ইসলামী পরিভাষায় ব্যবহৃত সকল শব্দের ক্ষেত্রে একই নিয়ম। যেমন- সালাত, যাকাত, সাওম ইত্যাদি।
সালাত শব্দের আভিধানিক অর্থ দুআ। যদি কোন ব্যাক্তি পুরো দিনও দুআয় মগ্ন থাকে, তাহলে কেউ তাকে বলবে না যে, সে সালাত আদায় করছে; বরং শরীয়ত সালাত আদায়ের যে পদ্ধতি বাতলে দিয়েছে তা অবলম্বনেই একমাত্র সালাত আদায় সম্ভব।
যাকাতের আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা। সাওম এর আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। কিন্তু এসব আভিধানিক অর্থ দ্বারা যাকাত ও সাওমের পরিচয় পাওয়া যায়না। শুধু পবিত্রতার মাধ্যমে যাকাত আদায়ের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়না। যে কোনো জিনিস থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে সাওমের দায়িত্ব পালিত হয় না। কেননা, আভিধানিক অর্থের বাহিরে এসব শব্দের নিজস্ব পারিভাষিক অর্থ ও পরিচয় আছে।
শরীয়তের পরিভাষায় এসব শব্দ বিশেষ কিছু ইবাদতকেই বুঝায়। যা তার নির্ধারিত নিয়ম কানুনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়।
এমনিভাবে খুতবার আভিধানিক অর্থ বক্তৃতা। কিন্তু এর মাধ্যমে খুতবার বাস্তবতা ও পরিচয় পাওয়া যায় না। শরীয়তের দৃষ্টিতে খুতবা সম্পাদিত হওয়ার জন্য শরীয়তের পক্ষ থেকে কিছু নিয়ম-কানুনের অনুসরণ করা অপরিহার্য। এসব নিয়ম-কানুন ও বৈশিষ্টাবলীর প্রতি লক্ষ্য করলে খুতবার শরয়ী তাৎপর্য স্পষ্ট হয়।

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *