ইসলাম কি আসলেই মানুষের বানানো? [সাইফুর রহমান]

প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মানুষের অনুসৃত ধর্ম ইসলামকে অনেকে মনে করে মানুষের বানানো ধর্ম !!! এইসব কলাবিজ্ঞানীদের মাথায় এতটুকু কমন সেন্স নাই, মানুষের দেয়া কোনো বিধান যুগে যুগে বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ ফলো করতে পারে না। মানুষেরা ধর্ম তৈরী করার কম চেষ্টা করে নি কিন্তু কোনো ধর্মই সমাদৃত হয়নি। শুধুমাত্র আঠারো শতকের পর থেকে আজ অবধি পৃথিবীতে মানবসৃষ্ট ধর্মের সংখ্যা একশ’র আশেপাশে!!! আধুনিক মানুষ আধুনিক ধারণা ও প্রযুক্তি দিয়ে সেকেলে ধর্মকে বাতিল প্রমাণ করতে অনেক বিধান তৈরী করেছে, কিন্তু ফলাফল শূন্য। বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সমাজনীতি সহ সবধরণের নীতি সংম্বলিত ধর্ম বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে, মানুষ গ্রহণ করেনি। অনেকে ধর্মীয়গ্রন্থও তৈরী করেছে তাদের ধর্মের, কেউ নিজে লিখেছে, কেউ বিভিন্ন জায়গা থেকে কপি পেস্ট করে চালিয়ে দিয়েছে, কোনোটাই মানুষ গ্রহণ করেনি। এই সব ধর্মের অধিকাংশের কেউ কোনো দিন নামও শোনেনি, ফলোয়ারদের সংখ্যা হাতে গোনা।
আধুনিক যুগের মানুষেরা মনে করে ইসলাম একটা সেকেলে পন্থা। অথচ আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কোনো মানুষ ইসলামের অনুরূপ কোনো বিধান দাঁড় করতে পারেনি। অযথা আস্ফালন না করে, কলাবিজ্ঞানীদের উচিত ইসলামের অনুরূপ একটা জীবন ব্যবস্থা সৃষ্টি করে প্রমান করা যে ইসলাম মানবসৃষ্ট, যদিও এই চ্যালেঞ্জ আরো প্রায় ১৫০০ বছর আগেই দেয়া হয়েছে, কেউ গ্রহণ করেনি।
.
.
অবসরের ফাঁকে মাঝে মাঝে ক্যামব্রিজে টুর গাইড হিসাবে কাজ করি। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীদের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির নামকরা কলেজ ও বিখ্যাত সব স্থাপনা ঘুরিয়ে দেখানো এবং এর ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য দেয়াই মূল কাজ। অল্পবিস্তর পড়াশোনাও করতে হয় এই কাজ করতে গিয়ে। পেমব্রুক নামক ক্যামব্রিজের একটি কলেজের ইতিহাস পড়তে গিয়ে অবাক হলাম। ১৩৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজের শুরুর দিকে একটা নিয়ম ছিলো, কোনো ছাত্র যদি দেখতো অন্য আরেকজন ছাত্র এলকোহল পান করছে বা ব্রোথেল হাউসে যাতায়াত করছে তখন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে ওই ছাত্রের নামে রিপোর্ট করতে হতো!!!!
বর্তমান সময় ও পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই নিয়মটিকে রূপকথার গল্প মনে হয়। খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন ক্রিস্টিয়ান নারীরা হিজাব পরতো। ইসলামের সাথে বাকিদের পার্থক্য এখানেই, ইসলাম তার স্বকীয়তা বজায় রেখে চলেছে গত ১৪০০ বছর ধরে। এ কারণেই বাকিরা লেজ কাটা শিয়ালের মতো চায় ইসলামও যেন তার অঙ্গ প্রতঙ্গ হারিয়ে বিকৃত হয়ে তাদের সাথে মিশে যাক।
.
লেখকঃ সাইফুর রহমান [ফেসবুক id: Saifur Rahman]

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *