প্রশ্ন:
পুরান ঢাকার কিছু এলাকায় বিগত ৩-৪ বছর আগে একটি মর্টগেজ ভাড়াটিয়া ব্যবস্থা চালু হয়েছে এবং ক্রমেই তা দ্রুত বিস্তার ঘটছে। মূলত বাড়িওয়ালাদের অর্থের প্রয়োজন মেটাতেই এই মর্টগেজ ভাড়াটিয়া ব্যবস্থাটি চালু হয়েছে। যার বিবরণ এই যে, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকদের তিন বা পাঁচ লক্ষ টাকা একত্রে প্রদান করে মর্টগেজ ভাড়াটিয়া বাড়ি বা ফ্ল্যাটে উঠে। ব্যবহৃত গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানির বিলই তারা কেবল পরিশোধ করে। মাসিক কোনো ভাড়া তাদের দিতে হয় না। একসঙ্গে নগদ তিন-পাঁচ লক্ষ টাকা প্রদানের কারণেই বিনা ভাড়ায় বসবাসের এমন ব্যবস্থা। রীতিমতো দলিল-দস্তাবেজ করেই পরস্পর চুক্তিবদ্ধ হয়। তিন বা পাঁচ বছর মেয়াদে সাধারণত চুক্তি হয়ে থাকে। চুক্তির সময়সীমা অতিক্রমের পর বাড়িওয়ালাকে শুরুতে দেওয়া তিন বা পাঁচ লক্ষ টাকা মর্টগেজ ভাড়াটিয়াকে একত্রে ফেরত দিতে হয়। অর্থাৎ চুক্তির মেয়াদকাল পর্যন্ত মর্টগেজ ভাড়াটিয়া বিনা ভাড়ায় থাকবে। কেবল গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল পরিশোধ করবে। চুক্তির মেয়াদ শেষে লগ্নির পুরো টাকা একত্রে ফেরত নেবে। কোনো কারণে বাড়িওয়ালা অর্থ ফেরত দিতে অক্ষম হলে তাদের মধ্যে পুনরায় নতুন করে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে আগের নিয়মেই ফ্ল্যাট বা বাড়িতে বিনা ভাড়ায় বসবাস করতে পারবে।
ব্যবস্থাটি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে শরীয়তের বিধান বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর:
মর্টগেজ ভাড়ার এ লেনদেন সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি সুদী লেনদেন। এককালীন ফেরতযোগ্য কিছু টাকা দিয়ে বিনিময়ে বন্ধকী বাড়ি বা ফ্ল্যাটে বসবাস করাটা মূলত ঋণের বিনিময়ে সুবিধা ভোগ করা, যা হারাম। তাই মর্টগেজ ভাড়ার এ পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগযোগ্য। বাসা-বাড়ি ভাড়ার স্বাভাবিক প্রচলিত বৈধ তরিকাটাই অনুসরণযোগ্য। বেশি টাকার প্রয়োজন হলে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য এককালীন অগ্রিম ভাড়া দিয়ে দিবে। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে কমও নির্ধারণ করতে পারবে। আর মেয়াদ শেষে ভাড়ার টাকা ফেরত দিতে হবে না।
-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৫০৭১; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২; শরহুল মাজাল্লাহ ৩/১৯৬
Leave Your Comments